শামসুল আলম রিফাত তারুণ্যের অপ্রতিরোধ্য শক্তি আর সাহসকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “জেনেসিস ফাউন্ডেশন” ।
দায়িত্ব পালন করছেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে। নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য।
“দৈনিক দেশনিউজ বিডি” এর সাথে সাক্ষাতকারে তিনি তুলে ধরেছেন সংগঠন প্রতিষ্ঠা, পরিচালনা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা।সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন “দৈনিক দেশনিউজ বিডি” এর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রেজওয়ান আহম্মেদ।
প্রশ্নঃ আপনার শৈশব এবং বেড়ে ঔঠা সম্পর্কে কিছু বলুন।
শামসুল আলম রিফাতঃ আমার শৈশব কেটেছে এক রক্ষণশীল পরিবারে। পরিবাবরের প্রত্যেককে চলতে হতো কঠোর নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে আর যার মুল কারিগর ছিলেন বাবা। বাবা আমাদের প্রতিনিয়ত শিখিয়েছেন মানুষের সাথে কিভাবে বয়বহার করতে হয়, মানুষের পাশে কিভাবে দাড়াতে হয়, এমনকি কেমন পোশাক পড়তে হবে সেটাও দিকনির্দেশনা দিতেন। আর আর আমার এসবকিছু তদারকি করতেন আমার বড় আপু। নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময়ে খেলতে যেতাম, আপুদের সাথে আড্ডা দিতাম গল্পের বই পড়তাম। এভাবেই কখন যেন জীবন থেকে মধুময় শৈশবটা হারিয়ে গেছে।
প্রশ্নঃ জেনেসিস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার গল্প এবং এর পিছনে কোনটি আপনাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল?
রিফাতঃ জেনেসিস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পিছনে অনেকগুলো গল্প আছে, সাথে অনেক মধুর স্মৃতিও।
কিন্তু আমি সবচেয়ে অনুপ্রেরণামুলক গল্পটা বলতে চাই। আমি ছোটবেলা থেকেই অনেক মা-ঘেঁষা ছিলাম। সারাদিনের বেশিরভাগ সময়ই আম্মুর সাথে কাটতো।
ওনাকে দেখতাম কেউ সাহায্যের জন্য আসলে কখনই ফিরিয়ে দিতেন না বরং কখনও কখনও প্রয়োজন এর চেয়েও বেশি দিয়ে দিতেন। এবং এ গুনটা আমি আমার বাবার মাঝেও দেখেছি।
ওনারা দুজনের আদর্শই আমার সব ভালো কাজের জন্য অনুপ্রেরণা। তারপর একটু বড় হয়ে বুঝতে শিখলাম দেশে এবং মানুষের জন্য দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে কিছু করা দরকার। কিন্তু একা একা অতটাদূর পৌঁছানো সম্ভব না। তাই বন্ধুদের সহযোগিতায় গড়ে তুললাম সামাজিক সংগঠন “জেনেসিস ফাউন্ডেশন”।
প্রশ্নঃ বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে বলুন এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি??
রিফাতঃ জেনেসিস ফাউন্ডেশন বর্তমানে দুটি ভাগে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রথমত, আমরা চেষ্টা করছি সমাজের বিভিন্ন সমস্যা আমাদের মত করে সমাধান করার চেষ্টা করছি। তাই ‘আলোকিত পৃথিবী’ ‘পৃথিবীর প্রাণ চাই’, ‘সচেতন নাগরিক’ ‘শীত হোক উষ্ণতার’, ‘বন্যার্তদের পাশে আমরা’, ‘ইদ হোক ভালোবাসার’ ইত্যাদি ইভেন্ট পরিচালনা করছি। আর দ্বিতীয়ত, দেশের তরুণদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব তৈরীর জন্য দেশব্যাপী ৯টি শাখায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জেনেসিস ফাউন্ডেশন। ভবিষ্যত পরিকল্পনা বলতে, দেশের তরুণ সমাজকে সাথে নিয়ে প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মৌলিক ও আত্মিক চাহিদা পুরনের গর্বিত অংশীদার হতে চাই আমরা।
প্রশ্নঃ করোনাকালে আপনারা উল্লেখ করার মত কি কি করেছেন?
রিফাতঃ করোনার শুরু থেকেই আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে থাকার। ১২ জেলায় কয়েকটি ধাপে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি, সাথে সাথে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করেছি। সম্প্রতি বন্যা দুর্গতদের জন্যও আমরা ইভেন্ট করেছি।
প্রশ্নঃ ফাউন্ডেশনের পথচলায় আপনার সবচেয়ে আনন্দের অভিজ্ঞতা কোনটি?
রিফাতঃ জেনেসিস ফাউন্ডেশনে কাজ করার প্রত্যেকটি অভিজ্ঞতাই আনন্দের। যখন দেখি আমার জন্য কারো মুখে হাসি ফুটেছে তখন যেন স্বর্গীয় আনন্দ পাই।
তবে ২০১৮ সালে কুড়িগ্রামে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচীকে এগিয়ে রাখতে চাই আনন্দের অভিজ্ঞতার তুলনায়।
প্রশ্নঃ আপনি বাংলাদেশকে কোন অবস্থানে দেখতে চান?
রিফাতঃ দেশের প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পুরন হবে, নৈতিকতা ও সুন্দরের চর্চা হবে সর্বত্র। ঠিক এমন এক সুখী সমৃদ্ধ প্রাণের বাংলাদেশ দেখতে চাই।